গাজী জয়নাল আবেদীন,রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের কথিত বিএনপির নেতা কর্তৃক নিজ কার্যালয়ে হামলার শিকার হয়েছেন রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আয়েশা সিদ্দীকা (৪২)।
১১ মার্চ (মঙ্গলবার) বেলা ২টার দিকে রাউজান উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস চলাকালীন সময়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় অভিযুক্ত হলেন বিএনপির নেতা পরিচয়ধারী শহিদুল ইসলাম ওরফে কালা শহীদ (৪০)। তিনি রাউজান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ বাড়ির মৃত মাদুল ড্রাইভারের ছেলে। হামলার শিকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন,‘আমি রাউজানে যোগদান করার পর থেকে শহীদুল নামে এক ব্যক্তি প্রতিদিন অফিস খোলার সাথে সাথে অফিসে প্রবেশ করে নানা ভাবে বিরক্ত করত। তিনি আমাকে বারংবার বলতেন, “আমি অনেক ত্যাগী নেতা, আমি খুবই ক্ষুধার্ত, আমাকে কিছু কাজ দিন।” তিনি আরো বলতেন, ” আমি রাজনীতি করি, থানার লুট হয়ে যাওয়া অস্ত্র উদ্ধার করে দিয়েছি। আমার অস্ত্র আছে, ছেলেপুলে আছে। আমাকে কাজ দিতে হবে। আমাকে টিআর দেন, কম্বল দেন”। এভাবে তিনি প্রতিদিন অফিস খোলার সাথে সাথে প্রবেশ করে এমন আচরণ করেন। শুধু আমি নই ইঞ্জিনিয়ার অফিসেও এভাবে বিরক্ত করেন। আমি থাকে বুঝিয়েছি, আমার অফিস কোন জনগণের সাথে কাজ করে না, জনপ্রতিনিধির সাথে কাজ করে। অফিসের ঠিকাদার ও উপকারভোগীদের সাথে কাজ করি। আমার কোন ক্ষমতা নেই যে আমি তাকে কাজ দিতে পারি।
আজও (মঙ্গলবার) দুপুরে সে অফিসে এসে পুনরায় আমাকে বলেন, আমি ওমান থেকে এসেছি। আমি বিএনপির ত্যাগী নেতা। আমি ক্ষুদার্ত আমাকে কাজ দিন। বরাবরের ন্যায় আজও তাকে বুঝিয়েছি তাকে কাজ দেওয়ার মত আমার ক্ষমতা নেই। আমি নামাজ পরব তাই তাকে বের হতে বললাম। সে বের হয়ে একবার এসে বলে আপনাকে ইউএনও ডাকছে। আমি বললাম, ইউএনও আমাকে ডাকলে যাব। আবার এসে বলে আপনাকে এসিল্যান্ড ডাকছে, তখন তাকে বললাম আপনি তো এখানে চাকরি করেন না। এসিল্যান্ড ডাকলে আমিও যাব। তখন তিনি আমার সাথে দূর্ব্যবহার করে আমাকে চেয়ার ছুঁড়ে মারেন। এযাত্রায় আমি বেঁচে যায়। সে ভাংচুর চালায়। ইউএন স্যার, ওসি ঘটনাস্থলে এসেছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছি। এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, আমরা এই বিষয়ে অফিসিয়ালি আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি। ওসিসহ আমরা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছি। হামলার আলামত, ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ঘটনাস্থলে বিএনপির নেতারাও এসেছে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হামলার শিকার পিআইও একজন সরকারী কর্মকর্তা। তিনি অভিযোগ করলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। এদিকে শহিদুল ইসলাম নিজেকে বিএনপির ত্যাগী নেতা পরিচয় দিলেও ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সাথে একটা ছবি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। দলীয় সূত্রে জানা যায় তার কোন দলীয় পদপদবী নেই। এই ঘটনায় দোষীকে বিচারের আওতায় এনে শান্তির দাবী জানিয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রেসবার্তা প্রেরণ করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাউজান শাখার নেতৃবৃন্দরা।