ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। আহতদের অনেকে বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই (৭০১) মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১২ মিনিট পর ১টা ১৮ মিনিটে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের ‘হায়দার হল’ নামক একটি ভবনে, যেখানে তখন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস চলছিল। ফলে আগুনে পুড়ে যায় বহু শিক্ষার্থী, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল জানান, “নিহতদের অধিকাংশই স্কুলের শিক্ষার্থী। আহতদের অন্তত ৭০ জন দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।” বার্ন ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা, সিএমএইচ এবং উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।
বিমানটিতে থাকা পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর গুরুতর আহত অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার কাজে নামে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ দল। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিতে হেলিকপ্টার ব্যবহারের কথাও জানানো হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে জরুরি হটলাইন চালু করা হয়েছে (০১৯৪৯০৪৩৬৯৭), যাতে স্বজনরা তথ্য জানতে পারেন। ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা জানান, “অনেক দগ্ধ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।”
এ ঘটনায় একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হাসপাতালগুলোর সামনে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের ভিড় ও কান্নার রোল চলছে। চিকিৎসক ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।


