ফেনী জেলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় টানা ভারী বর্ষণে ৫৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে মুহুরী নদীর পানি ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার অনেক ওপরে উঠে গেছে। পরশুরাম গেজ স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুলাই সকাল ৬টায় মুহুরী নদীর পানি ছিল ৬.৯৭ মিটার, যা রাত ৮টায় বেড়ে দাঁড়ায় ১৩.৮৫ মিটারে। বিপদসীমা ১২.৫৫ মিটার অতিক্রম করে ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
দীর্ঘ সময় ধরে নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরাম উপজেলার জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত সংযোগ বাঁধের স্থানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর দুই তীরবর্তী এলাকায় বাঁধে ব্যাপক ভাঙন ও ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে।
পরশুরাম উপজেলায় মোট ১০টি স্থানে ভাঙন হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে :
জঙ্গলগোনা (২টি, মুহুরী নদীর ডান তীর)
উত্তর শালধর (১টি, মুহুরী নদীর ডান তীর)
নোয়াপুর (১টি, মুহুরী নদীর বাম তীর)
পশ্চিম অলকা (১টি, মুহুরী নদীর বাম তীর)
ডি.এম. সাহেবনগর (১টি, সিলোনিয়া নদীর বাম তীর)
পশ্চিম গদানগর (১টি, সিলোনিয়া নদীর বাম তীর)
দক্ষিণ বেড়াবাড়ীয়া (১টি, কহুয়া নদীর বাম তীর)
পূর্ব সাতকুচিয়া (১টি, কহুয়া নদীর ডান তীর)
উত্তর টেটেশ্বর (১টি, কহুয়া নদীর বাম তীর)
ফুলগাজী উপজেলায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে আরো ৫টি স্থানে:
দেড়পাড়া (২টি, মুহুরী নদীর ডান তীর)
শ্রীপুর (১টি, মুহুরী নদীর ডান তীর)
উত্তর দৌলতপুর (১টি, কহুয়া নদীর ডান তীর)
কমুয়া (১টি, সিলোনিয়া নদীর বাম তীর)
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় সব মিলিয়ে ১৫টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে আশপাশের গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু স্থানে বাঁধ উপচে পড়ায় আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আশার কথা, ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল ৯টায় গেজ স্টেশন অনুযায়ী পানি কমে দাঁড়িয়েছে ১৩.৩১ মিটারে।
জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালাচ্ছেন। পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজরদারি চলছে বলে জানানো হয়েছে।


