রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় একটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির নিহত হন। তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন এবং মাত্র এক বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর দগ্ধ ও আহত অবস্থায় অনেককে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও রয়েছে।
বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণ মিশনের অংশ হিসেবে বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় একটি বহুতল ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ দৃশ্যের ভিডিও ও ছবি। ভিডিওতে দেখা যায়, ভবনের পাশে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে, আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী, আর সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও ছোটাছুটি।
উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর, পূর্বাচলসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে দমকল বাহিনী এসে কাজ শুরু করে। উদ্ধারকাজে স্থানীয় বাসিন্দা, সেনাবাহিনীর সদস্য ও শিক্ষার্থীরাও সহায়তা করেন।
আইএসপিআর এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনায় গোটা দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সরকার আগামীকাল মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। দিনব্যাপী সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
এ ঘটনায় নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।


