সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। আন্দোলন, কর্মবিরতি বা সহকর্মীর কাজে বাধা দিলে বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি বা চাকরিচ্যুতির মতো কঠিন শাস্তির বিধান যুক্ত হয়েছে সংশোধিত সরকারি চাকরি আইনে।
২৩ জুলাই রাষ্ট্রপতির জারি করা এক অধ্যাদেশে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে নতুন করে একটি ধারা (৩৭(ক)) যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকেন বা অন্য সহকর্মীকে কাজে বাধা দেন, তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চাকরিচ্যুতি, বাধ্যতামূলক অবসর বা পদাবনতির মতো শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা, অন্যকে নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাধা দেওয়া কিংবা অনুমতি ছাড়া সম্মিলিতভাবে কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরনের শাস্তির বিধান প্রযোজ্য হবে।
আইনের আওতায় অভিযুক্ত কর্মচারীকে অবশ্যই কারণ দর্শানোর সুযোগ দেওয়া হবে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিতে পারলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সরাসরি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এই শাস্তির বিরুদ্ধে কোনো আপিলের সুযোগ না থাকলেও ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে রিভিউ আবেদন করা যাবে। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।
বিশ্লেষক ও আইনজীবীরা বলছেন, সংশোধিত আইনে ‘আন্দোলন’ শব্দটি সরাসরি না থাকলেও ইঙ্গিতে তা স্পষ্ট যে, কর্মবিরতি, ধর্মঘট বা অন্য কোনো বিক্ষোভ কর্মসূচিকে এর আওতায় আনা হয়েছে।
সংসদ ভেঙে যাওয়ায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই সংশোধনী কার্যকর হয়েছে। এতে সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে চাকরিতে থেকে কোনো কর্মসূচির নামে দায়িত্ব এড়ানো কিংবা অন্যকে কাজে বাধা দেওয়া কোনোটিই বরদাশত করা হবে না।


