গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও খাদ্য অবরোধের ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় খাদ্যের অভাবে সেখানে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতকসহ অন্তত চারজন শিশু।
বুধবার (২৩ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনাহারে মারা যাওয়া ছয় সপ্তাহ বয়সী শিশুটির নাম ইউসুফ আবু জাহির। সে দুধের অভাবে মারা যায়। শিশুটির চাচা আদহাম আল-সাফাদি আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, “বাজারে দুধ পাওয়া যাচ্ছে না। আর যদি কোনোভাবে মেলে, তাহলে এক টিনের দাম পড়ছে ১০০ ডলার পর্যন্ত, যা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে।”
খাদ্যের অভাবে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে আরও রয়েছে ১৩ বছর বয়সী কিশোর আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, যিনি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে ১০১ জন মারা গেছেন, যাদের মধ্যে ৮০ জনই শিশু। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতেই এসব মৃত্যুর বড় একটি অংশ ঘটেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিলে দ্রুত খাদ্য মজুত ফুরিয়ে যায়। মে মাসে কিছুটা সীমিত আকারে সহায়তা ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলেও, তা সম্পূর্ণভাবে একটি মার্কিন-ইসরায়েলি সমর্থিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এর মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কোনও ভূমিকা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
গাজায় ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকট ও শিশুমৃত্যুর এ মর্মান্তিক পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নতুন করে মানবিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে পূর্ণ মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ না দিলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।


