ইপসিতা জাহান সুমা, চুয়েট ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাসে শুরু হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ জাতীয় রোবটিক্স ও প্রযুক্তি উৎসব ‘এমআইই রোবোলিউশন ১.০। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিল্ডিং-৪-এ নির্মিত হয়েছে রোবটের যুদ্ধের ময়দান। সবার দৃষ্টি এখন সেই লড়াইয়ের দিকে—যেখানে মুখোমুখি রোবো গাড়ি আর মাঝখানে টেনিস বল। সময় মাত্র চার মিনিট। লক্ষ্য—বল প্রতিপক্ষের জালে পাঠানো। নিয়মভঙ্গ করলে পয়েন্ট কাটা হবে। এই ‘সকার বট’ প্রতিযোগিতাটি হয়েছে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।
মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং (এমআইই) বিভাগের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে দেশের ৪১টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে আগত প্রায় সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। উৎসবের প্রথম দিন ছিল সেমিনার পর্ব, যেখানে আমন্ত্রিত বক্তারা রোবটিক্সের ব্যবহার ও প্রযুক্তি খাতে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
আজ দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় সকার বট, লাইন ফলোয়িং রোবট ও ‘টেকাথন’ প্রতিযোগিতা।উৎসবের শেষ দিন ১০ মে অনুষ্ঠিত হবে প্রজেক্ট উপস্থাপন, ক্যাড প্রতিযোগিতা ও দাবা প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। রোবো সকারে রোবটে অংশগ্রহণ করতে আসেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি (আইইউটি) এর শিক্ষার্থী সাদাব জসীম হিশাম। তিনি বলেন, ছোটবেলায় মোটর নিয়ে কাজ করতে গিয়েই এ বিষয়ের প্রতি আমার ভালো লাগা শুরু। এখানে এই প্রতিযোগিতায় এসে খুব ভালো লাগছে। আয়োজন বেশ সুন্দর হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এই রোবট নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি উচ্চতর গবেষণাও আগ্রহ আছে আমার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালেহ জায়েদ বলেন, আগে ইন্টারনেটে প্রচুর রোবোটিক্সের ভিডিও দেখতাম। সেখান থেকেই এসবের প্রতি আগ্রহ। চুয়েটে এসে অংশ নিয়ে ভালো লাগছে। ভবিষযতেও রোবট নিয়ে কাজ করতে চাই। এ উৎসবের অন্যতম আরেক সেগমেন্ট ‘টেকাথন’ এ অংশ নিয়েছেন চুয়েটের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম ইমন। তিনি জানান, এই টেকাথন হচ্ছে প্রথম অনসাইট হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর সমন্বিত হ্যাকাথন। এখানে অংশ নেওয়াটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবুও ভালো লাগছে। সামনের দিনগুলোতে এমন আরও আয়োজন দেখতে পাব বলে আশা করি।
উৎসব উপলক্ষে এমআইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. প্রসঞ্জীত দাশ বলেন, এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও রোবটিক্স শিক্ষার প্রতি তরুণদের আগ্রহ তৈরি করা, তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ানো এবং একটি মানসম্মত জাতীয় প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। এটি শুধুমাত্র একটি ইভেন্ট নয়, বরং প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও এই উৎসবে দেশসেরা গবেষক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অনুপ্রেরণা বাড়িয়ে তুলবে।
উল্লেখ্য, উৎসবে অনুষ্ঠিতব্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকবে মোট ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। এতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে সিএস ল্যাব, এবং অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে আইকোনিক, সিনকস, পার্টিকেলস, ওয়াইজেন, ইক্লেকটিক, ম্যাক্রো কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্যাক্টরি নেক্সট।